Theme Layout

Boxed or Wide or Framed

Theme Translation

Display Featured Slider

Yes

Featured Slider Styles

[Centred][caption]

Display Grid Slider

No

Grid Slider Styles

[style5][caption]

Display Trending Posts

Display Author Bio

Yes

Display Instagram Footer

Yes

Dark or Light Style

শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীমা সারদামণির পুণ্যভূমি কামারপুকুর ও জয়রামবাটি


হুগলী-বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুর এই তিনটি জেলার সন্ধিস্থল কামারপুকুর। আগে এই গ্রামটির নাম ছিল সুখলালগঞ্জ। গ্রামের আদি জমিদার সুখলাল গোস্বামীর নামেই এই নাম। কামারপুকুর একটি পল্লীগ্রাম হলেও শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মস্থানের সৌজন্যে এই নগন্য পল্লী আজ পৃথিবীর মধ্যে এক সুপরিচিত স্থান। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের আর্বিভাব এবং তাঁর শিষ্য ও ভক্তদের এই পুণ্য স্থানে যাতায়াতের জন্য এই স্থানটি তীর্থস্থান হিসাবে খ্যাতিলাভ করেছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ছেলেবেলার নাম 'গদাধর', গদাধর চট্টোপাধ্যায়। পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের পৈতৃক নিবাস ছিল 'দেরেপুর' গ্রামে। সেই গ্রামের জমিদার রামানন্দ রায়ের হয়ে এক মিথ্যে মামলায় সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করার ফলে ওই জমিদার চক্রান্ত করে তাঁকে অন্য এক মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে নিঃস্ব করে 'দেরেপুর' গ্রামের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেন। সেইসময় ক্ষুদিরামের বন্ধু সুখলাল গোস্বামী ছিলেন কামারপুকুরের জমিদার। সুখলালের আমন্ত্রণে ক্ষুদিরাম তখন সপরিবারে কামারপুকুর এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। সুখলাল তার নিজের বাড়ির উত্তরে ক্ষুদিরামকে বসবাস করার জন্য জমি দান করেন এবং লক্ষ্মীজলায় কিছু ধান জমিও দিয়েছিলেন। কামারপুকুরের এই বাসভূমিতেই ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব জন্মগ্রহণ করেন। সেই পুণ্যভূমি আজ 'শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ' নামে পরিচিত।

শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের গেট

শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ

মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশের আগে জুতা খুলতে হবে। ঢোকার মুখে গেটের ভেতরে বাম পাশে একটি ঘরে জুতো রাখার ব্যবস্থা আছে। যার ফলে জুতো রাখার ঝামেলা নেই। মন্দির চত্বরের গেটের কাছে দেওয়ালের পাশেই দেখতে পেলাম শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নিজের হাতে রোপন করা একটি আমগাছ। আমগাছটির পাশেই রয়েছে তাঁর জন্মস্থানের উপরে নির্মিত বর্তমান মন্দিরটি। মন্দিরটির শিল্প পরিকল্পনা করেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসু। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থানটিতে ছিল একটি ঢেঁকিশালা, ঐ ঢেঁকিশালায় একটি উনুনের পাশে তাঁর জন্ম হয়। এই মন্দিরে যে পাথরের বেদীর ওপর শ্রীরামকৃষ্ণের শ্বেতপাথরের মূর্তি স্থাপিত ওই বেদির সামনে একটি ঢেঁকি ও উনুনের প্রতিরূপ খোদাই করে তাঁর জন্মগ্রহণকালের পরিবেশের রূপ দেওয়া হয়েছে। জন্মস্থানের পশ্চিমে রয়েছে কুলদেবতা রঘুবীরের মন্দির। শ্রীরামকৃষ্ণের পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় কুলদেবতা রূপে রঘুবীর শিলাকে প্রতিষ্ঠা করে নিত্যপূজোর ব্যবস্থা করেছিলেন। আগে এই মন্দিরটি মাটির দেওয়াল ও খড়ের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর ছিল। ১৯৫১ খ্রীষ্টাব্দে শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দির নির্মাণের সময় ঐ একই স্থানে, একই পরিমাণ জায়গা নিয়ে নতুন করে রঘুবীর মন্দিরটিও ইঁট সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা হয়। এই মন্দিরে রঘুবীরের শিলা ছাড়াও রামেশ্বর শিবলিঙ্গ, শীতলা দেবীর মাটির ঘট, একটি নারায়ন শিলা ও একটি গোপালের চিত্র নিত্য পূজিত হয়। রঘুবীরের মন্দিরের উত্তরে দেখতে পেলাম খড়ের ছাউনি চাল ও মাটির দেওয়াল দেওয়া বারান্দা সহ একটি কুটীর রয়েছে। এই ঘরটিতে শ্রীরামকৃষ্ণদেব বাস করতেন। এই ঘরসংলগ্ন আরও একটি খড়ের চাল দেওয়া বারান্দা সহ মাটির দোতালা কুটীর দেখতে পেলাম। দোতালা এই ঘরটিতে পরিবারের অন্যান্য সকলে বসবাস করতেন। কুটীরের উত্তর দিকে রয়েছে একটি শিবমন্দির। মন্দিরের গায়ে কিছু পোড়ামাটির কারুকার্য আছে। ক্ষুদিরামের প্রতিবেশী তথা বন্ধুসম মধু যুগীর বাড়ি ছিল এই শিবমন্দিরের উত্তর-পূর্ব কোণে। মধু যুগীর পিতা রামানন্দ যুগী তীর্থ ভ্রমণ করে এসে এই শান্তিনাথ শিবমন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরটিই যুগীদের শিবমন্দির নামে খ্যাত। শ্রীরামকৃষ্ণের মাতা চন্দ্রমণি দেবী একদিন যুগীদের এই শিবমন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে ধাত্রীমাতা ধনিকামারানীর সাথে কথা বলছিলেন হঠাৎ তখন তাঁর এক অলৌকিক জ্যোতিদর্শন ঘটে। ভয়ে বিস্ময়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং পরে অনুভব করলেন যে তাঁর গর্ভসঞ্চার হয়েছে। তার পরেই পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্ম হয়। মন্দিরের দক্ষিণে এখন যে স্থানে নাটমন্দির আছে সেখানে সুখলাল গোস্বামীর বাড়ি ছিল। নাটমন্দিরটি বেশ পরিচ্ছন্ন, টাইলস দিয়ে বাঁধানো। মন্দিরের পূর্বদিকে রয়েছে একটি পুকুর, এটি খাঁ পুকুর নামে পরিচিত। এখানে এসে এই পরিবেশে মন যেন অনেকটা শান্তি পেল। মঠের ভিতরে ছবি তোলা নিষেধ রয়েছে, সেটা বিভিন্ন জায়গায় লেখা আছে এবং নিরাপত্তারক্ষীরাও বেশ কড়া নজর রাখে। তাই এখানে মঠের ভিতরের কোনো ছবি দেওয়া গেলো না।

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মস্থান
নাটমন্দিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে চলে এলাম মঠের পূর্বদিকে লাহাবাবুদের বাড়ির দুর্গামণ্ডপের সামনে। তৎকালীন কামারপুকুরের জমিদার ছিলেন ধর্মদাস লাহা, তিনি লাহাবাবু নামেই পরিচিত ছিলেন। পূর্বে কামারপুকুরের জমিদার ছিলেন সুখলাল গোস্বামী, পরবর্তীকালে সুখলাল গোস্বামীর পুত্র কৃষ্ণলাল গোস্বামীর কাছে কামারপুকুরের অধিকাংশ জমি ক্রয় করে লাহাবাবুদের হাতে কামারপুকুরের জমিদারি চলে যায়। শ্রীরামকৃষ্ণের বাল্যকালের বহু স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে এই লাহা বংশের সাথে। লাহাবাবুদের এই বাড়িতে গদাধরের প্রায়ই যাতায়ত ছিল। তাঁহাদের প্রতিষ্ঠিত বিষ্ণুমন্দির ও দুর্গামন্ডপ এখনো প্রাচীন স্মৃতিবহন করে চলেছে। বাড়ির সামনে ধর্মদাস লাহার নির্মাণ করা লাহাবাবুদের চণ্ডীমণ্ডপ বা দুর্গামন্দিরটি অবস্থিত। প্রতি বছর এখানে ঠিক আগের মতোই পূজো হয়ে থাকে।

লাহাবাবুদের দুর্গামণ্ডপ
লাহাবাবুদের দুর্গামন্দিরের ঠিক মুখোমুখি রয়েছে একটি আটচালা নাটমন্দির, সেখানে সকালে ও বিকালে চলতো একটি পাঠশালা। পাঠশালাটি এখনো রয়েছে। শ্রীরামকৃষ্ণদেব শৈশবে এই পাঠশালায় পড়তেন। পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পিতা এই পাঠশালায় ভর্তি করে দেন। পাঠশালায় ভর্তি করলেও লেখাপড়ার প্রতি গদাধরের খুব একটা মনোযোগ ছিল না।

পাঠশালায় সহপাঠীদের সাথে বালক গদাধর
তবে গদাধরের হাতের লেখা ছিল অতি সুন্দর এবং ছবি আঁকায় দক্ষতাপূর্ণ। প্রমাণস্বরূপ তাঁর সুন্দর হস্তাক্ষরে লেখা 'সুবাহুর পালা' পুঁথিখানি আজও সংরক্ষিত আছে। এই পাঠশালার উত্তর-পূর্ব কোণে দেখতে পেলাম একটি শিবের আটচালা মন্দির রয়েছে। ধর্মদাস লাহার কন্যা প্রসন্নময়ী দেবীর প্রতিষ্ঠা করা এটি পার্বতীনাথ শিবের মন্দির।

লাহাদের পাঠশালা ও পার্বতীনাথ শিব মন্দির (ডানদিকে)
দুর্গামণ্ডপের একপাশে দেখতে পেলাম ধর্মদাস লাহার একটি সিমেন্টের মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। ঐ মূর্তির পাশেই রয়েছে লাহাবাবুদের বাড়িতে ঢোকার দরজা। লাহাদের বাড়ির ভিতরে মারাঠা বর্গীদের আমলে তৈরি একটি বিষ্ণুমন্দির আছে। মন্দিরটি লাহাবাবুর বংশের জগন্নাথ লাহা নির্মাণ করেছিলেন। তিন খিলানযুক্ত বারান্দাসহ বিষ্ণুমন্দিরটির গায়ে কুড়িটি পোড়ামাটির কারুকার্যখচিত দেবদেবীর টেরাকোটা মূর্তি আছে। দুই দিকে পাঁচটি করে দশটি এবং মাথার ওপর লম্বাভাবে দশটি মূর্তি আছে। মাথার ওপর একটি গণেশের মূর্তিও আছে। মন্দিরটি দোতালা, উপরে ও নীচে ঘর আছে। আগেও বলেছি পাঠশালায় লেখাপড়ার প্রতি গদাধরের মনোযোগ ছিল না। গদাধর পাঠশালায় পড়তে না গিয়ে এই মন্দিরে এসে মা কালীর মূর্তি আঁকতেন ও ধ্যান করতেন। বিষ্ণুমন্দিরের পাশে চালাঘরে একসারিতে মাটির তৈরি বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি দেখা গেলো।

বিষ্ণুমন্দির
লাহাবাবুদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ডানদিকের রাস্তায় কিছুটা হেঁটে চলে এলাম পাইনদের বাড়িতে। এই বাড়িতেও গদাধরের প্রতিনিয়ত যাতায়ত ছিল। কামারপুকুরের এই অঞ্চলটি বেনে পাড়া নামে প্রসিদ্ধ ছিল। গ্রামের ধনী ব্যবসায়ী সীতানাথ পাইন ছিলেন ধর্মনিষ্ঠ। সীতানাথ পাইনের সঙ্গে গদাধরের পরিবারের বিশেষ সখ্যভাব ছিল। অভিভাবকগণের নিষেধে তাদের বাড়ির মেয়েরা বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে পারতেন না। গদাধরের গান, পাঠ ও অভিনয় তাদের বাড়ীর প্রত্যেকেরই খুব প্রিয় ছিল। সেইজন্য গদাধরকে অনেক সময় সীতানাথ পাইনের স্ত্রী তাদের বাড়ীতে আমন্ত্রণ করতেন। পাড়ার রমনীরাও সেইসময় গদাধরের পাঠ শুনে ও অভিনয় দেখে আনন্দ উপভোগ করিতেন। এই পাইন বাড়িতে রামায়ণ মহাভারত পাঠ ও গান পরিবেশন করার সময় গদাধরের বহু ভাবাবেশ আবির্ভূত হতো।

সীতানাথ পাইনের বাড়ি
পাইনদের বাড়ির গেটের ভিতরে ঢুকেই বাঁ-দিকে দেখি সীতানাথ পাইনের এক দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় লক্ষণ পাইনের বাড়ি। লক্ষণ পাইন ছিলেন সীতানাথের কারবারের একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী। উল্টোদিকে সীতানাথ পাইনের বিষ্ণু মন্দিরের ভগ্নাবশেষ।

সীতানাথ পাইনের বিষ্ণু মন্দিরের ভগ্নাবশেষ
ইঁটের তৈরী এই মন্দিরের বেদী ছাড়া আজ আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। অনেকে এই মন্দিরটিকে শিব মন্দির বলে অভিহিত করেন। একটু এগিয়ে রয়েছে গদাধরের সেই নাট্যমঞ্চ যেখানে এখন 'শ্রীরামকৃষ্ণ নাট্য স্মৃতিমঞ্চ' রূপে একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে।

লক্ষণ পাইনের বাড়ি
সীতানাথ পাইনের বাড়ীর সামনে এই জায়গায় শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে প্রতিবছর যাত্রাগানের আয়োজন করা হতো। একবার শিবরাত্রির সময় যাত্রাপালায় শিবের ভূমিকায় অভিনয় করার সময় বালক গদাধর এখানে ভাবাবিষ্ট হয়ে বাহ্যজ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়েছিলেন।

'শ্রীরামকৃষ্ণ নাট্য স্মৃতিমঞ্চ'
মন্দিরের ডানদিকে রয়েছে সীতানাথ পাইনের বাড়ি। মন্দিরের পাশে রয়েছে 'বেনেপুকুর', এটি পাইনদের পুকুরঘাট। পুকুরঘাটে যাওয়া নিষেধ আছে। মনোরম পরিবেশ; চারদিক একটু ঘুরে কয়েকটি ছবি তুলে পাইনবাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম।

'বেনেপুকুর'
সীতানাথ পাইনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে লাহাবাবুদের পাঠশালা পার হয়ে চলে এলাম ডানদিকে গোপেশ্বর শিবের মন্দিরে। মন্দিরটি খুব প্রাচীন। সুখলাল গোস্বামী অথবা তাঁর বংশের কোনো পূর্বপুরুষ এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে অনেকে মত প্রকাশ করেন। একবার দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণের যখন দিব্যোন্মাদ অবস্থা হয়েছিল তখন তাঁর মাতা চন্দ্রমণি দেবী খবর পেয়ে ভাবলেন গদাধর পাগল হয়ে গেছেন। পুত্রের সুস্থ কামনায় শিবের কাছে 'হত্যে' দেওয়ার সঙ্কল্প স্থির করলেন। কামারপুকুরের এই গোপেশ্বর শিব মন্দিরের 'বুড়ো শিব'কে জাগ্রত দেবতা মনে করে 'হত্যে' দিয়ে পড়ে থাকেন। তিনি এখানে প্রত্যাদেশ পান তাঁর মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার জন্য মুকুন্দপুরের শিবের কাছে 'হত্যে' দেওয়ার। তারপর গোপেশ্বর শিবের প্রত্যাদেশ অনুসরণ করে চন্দ্রমণি দেবী মুকুন্দপুরের শিব মন্দিরে 'হত্যে' দিয়ে সুফল লাভ করেছিলেন। এই ঘটনার পরে মুকুন্দপুরের শিবের কাছে অনেকেই ব্যাধিমুক্তির জন্য 'হত্যে' দিয়ে থাকেন।

গোপেশ্বর শিবের মন্দির
গোপেশ্বর শিবের মন্দিরের পিছনে দেখতে পেলাম একটি বড় পুকুর। কামারপুকুর তথা আশেপাশের গ্রামগুলিতে 'মানিকরাজা' নামে খ্যাত স্থানীয় এক ধনবান ব্যক্তি মানিকচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এই পুকুরটি খনন করিয়েছিলেন ধনী কামরাণীর পিতৃকুলের কোনো এক ব্যক্তিকে দিয়ে। এটি কামারদের পুকুর নামে পরিচিত ছিল। এই পুকুরের নাম থেকেই পরে গ্রামের নামকরণ করা হয় 'কামারপুকুর'। বর্তমানে লাহাবাবুদের পরিবারের অধীনে রয়েছে এই পুকুরটি। পুকুরপাড়ে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে চলে এলাম ধনী কামারানীর বাস্তুভিটেয়। সেই জায়গাতে দেখি ছোট্ট একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে।

কামারপুকুর
গদাধরের ধাত্রীমাতা ছিলেন ধনী কামারানী। জন্ম থেকেই ধাত্রীমাতা রূপে অপার্থিব স্নেহে তাঁকে লালনপালন করেন। গদাধর ধাত্রীমাতাকে কথা দিয়েছিলেন উপনয়নের সময় তাঁর কাছ থেকেই প্রথম ভিক্ষা গ্রহণ করবেন। ধনী কামারানী ছিলেন অব্রাহ্মণ মধুসূদন কর্মকারের মেয়ে। তাই উপনয়নের সময় আত্মীয়স্বজনেরা আপত্তি জানালেও সকলের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে জাতপাতের প্রথা ভেঙে তাঁর ধাত্রীমাতা ধনী কামারানীকে ভিক্ষামা রূপে গ্রহণ করে তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। ধনী কামারানীর বাস্তুভিটেয় অবস্থিত এখন এই মন্দিরের মধ্যে 'শিশু গদাধরকে কোলে করে ধনী কামারানী বসে আছে' এইরূপ একখানি প্রতিমূর্তি প্রতিষ্ঠিত করা আছে। এই মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণের একটি প্রতিমূর্তির নিত্য পুজো হয়।

ধনী কামারানীর মন্দির
হেঁটে ফিরে যাওয়ার পথে মঠের গেটের ঠিক উল্টোদিকে অবস্থিত হালদারপুকুর থেকে একবার ঘুরে গেলাম। গ্রামে যতগুলো পুকুর আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় এই হালদারপুকুর। পূর্বে এই পুকুরের জলে কামারপুকুরের সকলে স্নান করা ছাড়াও পানীয় জল ও রান্নার কাজে ব্যবহার করতেন। এই পুকুরে ছেলেবেলায় গদাধর ও তাঁর বাড়ির অন্যান্য সকলে স্নান করতেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ছেলেবেলার স্মৃতির সাথে এই পুকুর বিশেষভাবে জড়িয়ে রয়েছ বলে অনেক ভক্তগণ এখানে এলেই এই পুকুরে ডুব দিয়ে স্নান করেন। পুকুরে স্ত্রী ও পুরুষের জন্য আলাদা দু'টো বাঁধানো ঘাট আছে।
কামারপুকুর মঠে ঠাকুর দর্শনের সময়
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর – ভোর ৪ টে থেকে দুপুর ১১ টা ৩০ মিনিট এবং বিকাল ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্তঅক্টোবর থেকে মার্চ – ভোর ৪ টে ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ১১ টা ৩০ মিনিট এবং বিকাল ৩ টে ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত
কোভিডের ফলে প্রাসাদ বিতরণ বন্ধ থাকায় এবার গিয়ে প্রাসাদ খাওয়া হয়নি। এর আগে এখানে এসে প্রাসাদ গ্রহণ করেছি। এখানে নিরামিষ ভোগের ব্যবস্থা রয়েছে এবং খাওয়ার জন্য বিশাল হল ঘর রয়েছে। সাড়ে এগারোটার মধ্যে অফিসঘর থেকে আগেই কুপন কেটে নিতে হবে। দুপুর একটা নাগাদ হলঘরে প্রসাদ বিতরণ হয়৷

হালদারপুকুর
পৌঁছে গেলাম পার্কিং লটের কাছে। কামারপুকুরের বিখ্যাত সাদা বোঁদে কিনে চললাম জয়রামবাটির দিকে। কামারপুকুর-জয়রামবাটি রোড ধরে কিছুদূর এগিয়ে বাঁ-দিকে টার্ন নিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরে চলে এলাম অনেকটা ভিতরে হরিসভা গ্রামে মাণিক রাজার বাড়িতে। হরিসভা গ্রামের আদি নাম ছিল ভুরসুবো। এই ভূরসুবো গ্রামেই মাণিকচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় নামে এক ধনী ব্যক্তি বাস করতেন। তিনি অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ ছিলেন এবং দাতা হিসাবেও তার যথেষ্ট সুনাম ছিল। এলাকার দুঃস্থ মানুষ ও সাধু সন্তের সেবা করতেন। এই কারণেই আশেপাশের লোক তাকে 'মাণিক রাজা' বলে সম্বোধন করতেন। একসময় মাণিক রাজার আমবাগানটি ছিল বালক গদাধর ও তাঁর বন্ধুদের খেলার জায়গা।

মাণিক রাজার বাড়ি
বর্তমনে মাণিক রাজার সেই আমবাগানের অস্তিত্ব আর নেই। তবে হরিসভা গ্রামের মাণিক রাজার প্রাসাদোপম বাড়িটির ধ্বংসাবশেষের সামান্য কিছু এখনো রয়েছে। মাণিক রাজা গদাধরের পিতার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। সেই সূত্রেই এই বাড়িতে গদাধর বাল্যকালে অনেকবার গিয়েছেন। মাণিক রাজাও তাঁকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। ঠাকুর রামকৃষ্ণের স্মৃতি বিজড়িত মাণিক রাজার তৈরি দুর্গামণ্ডপটি এখন সংস্কার করে নতুন করা হয়েছে।

মাণিক রাজার দুর্গামণ্ডপ

শ্রী শ্রী মাতৃ মন্দির

'মাতৃ মন্দির'
হরিসভা গ্রামের মাণিক রাজার বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোতুলপুরের রোড ধরে সোজা চলে এলাম জয়রামবাটীর মাতৃ মন্দিরে। বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত জয়রামবাটীর আদি নাম ছিল 'তেঁতুলমুড়ি'। এই জয়রামবাটীই সরদামণি দেবীর জন্মস্থান। কামারপুকুর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জয়রামবাটী গ্রামের রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের জ্যেষ্ঠা কন্যা সারদামণি ছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সহধর্মিনী। সরদা দেবী ছিলেন তাঁর যাবতীয় সাধনা ও সিদ্ধির মূল উৎস এবং ভারতীয় নারীত্বের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিস্বরূপা। বর্তমানে সরদামণি দেবীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাঁর বাসস্থানটিতে 'মাতৃ মন্দির' নামে একটি মঠ নির্মাণ করা হয়েছে। সরদা দেবী যে কুটীরে বাস করতেন এবং পরবর্তীকালে তাঁর বাসের জন্য যে কুটির তৈরি হয়েছিল তা স্মৃতি হিসেবে এখানে সযত্নে রাখা হয়েছে।

'মাতৃ মন্দির' মঠ
মাতৃ মন্দিরের গেট খুলতে দেরি আছে দেখে পার্কিং লট থেকে বেরিয়ে ডানদিকের গলিতে ঢুকে পায়ে হেঁটে সোজা পৌঁছে গেলাম সারদা মায়ের স্মৃতি বিজড়িত সিংহবাহিনী মন্দিরে। জয়রামবাটির গ্রাম্য দেবী সিংহবাহিনী মা দুর্গার একটি রূপ। সারদা দেবী বহুবার এই মন্দিরে পূজো দিতে এসেছেন। এখানকার পুরাতন মন্দিরের ভিত্তির মন্ত্রপূত মাটির ওষধি গুণে সাপে কাটা থেকে যেকোনো বিষাক্ত ঘা অলৌকিকভাবে সেরে যায় বলে আজও ভক্তরা বিশ্বাস করে এখান থেকে মাটি ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য নিয়ে যান।

সিংহবাহিনী মন্দির
আবার ফিরে এলাম মাতৃ মন্দিরের কাছে। মাতৃ মন্দিরের গেটের বাইরে ডানদিকে রয়েছে মায়ের নতুন বাড়ি। সরদা মায়ের একনিষ্ঠ পূজ্যপাদ স্বামী সারদানন্দ মহারাজ পুণ্যপুকুরের পশ্চিম পাড়ে একখণ্ড জমি কিনে তাঁর জন্য এই নতুন বাড়িটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। নতুন বাড়ির চার কোণে চারটি মাটির দেওয়াল ও খড়ের ছাউনি চাল সহ কুটীর রয়েছে। এখানে চারটি ঘরের মধ্যে পশ্চিমমুখী রাস্তার ধারে বাইরের ঘরখানিতে ভক্তদের বাসার জন্য ও জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য ছিল।
জয়রামবাটী ও কামারপুকুর দুই জায়গাতেই গাড়ি রাখার জন্য ভীষণ ভালো ফ্রি পার্কিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। মন্দির বন্ধ থাকার সময় বিশ্রামের জন্য দুই জায়গাতেই টয়লেট সহ সুন্দর ওয়েটিং-রুম রয়েছে। কামারপুকুরের বিখ্যাত মিষ্টান্ন সাদা বোঁদে। শ্রীঠাকুর ও সারদা মায়ের দুজনেরই খুব প্রিয় ছিল এই বোঁদে। ঐতিহ্যবাহী এই বোঁদে কেবল এখানেই পাওয়া যায় অন্যত্র কোথাও দেখতে পায়নি।
ভেতরের তিনখানি ঘরের মধ্যে একটিতে সারদা দেবীর ভাইঝি নলিনী বাস করতেন আর একটি ছিল রান্নাঘর। এই নতুন বাড়িতে সরদা দেবী বাস করেছিলেন চার বছর। গেটের বামদিকে অর্থাৎ মায়ের নতুন বাড়ির উল্টোদিকের গলিতে কিছুটা এগিয়ে দেখি উঁচু দেওয়াল ঘেরা মায়ের পুরাতন বাড়ির বন্ধ দরজা। তার ঠিক উল্টোদিকের ঘরটিতে সারদা দেবী যখন তাঁর ভাইদের সাথে বাস করতেন তখন সেখানে জগদ্ধাত্রী পূজা করতেন। মাতৃ মন্দিরের ভিতর ছাড়া এখানে আর সেরকম কিছু দেখার নেই।

মায়ের নতুন বাড়ি
মাতৃ মন্দিরের গেট খুললো সাড়ে তিনটের সময়, তার আগে চারপাশটা একটু ঘুরে নিয়েছিলাম। মঠের মধ্যেই রয়েছে মাতৃ মন্দির, মায়ের পুরাতন বাড়ি, পুণ্যপুকুর ও সুন্দরনারায়ণ ধর্মঠাকুরের মন্দির। গেটের ভিতরে প্রবেশ করে চলে এলাম মায়ের জন্মস্থানে। সারদা দেবী যেখানে জন্মিয়েছিলেন সেখানে একটি সুন্দর মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে যা এখন 'মাতৃ মন্দির' নাম খ্যাত। মন্দিরের উপাসনাগৃহে সারদা মায়ের একটি শ্বেতপাথরের মূর্তি বসানো। মাতৃ মন্দিরের ঠিকসামনেই দেখতে পেলাম একটি বিশাল দীঘি। সারদা মা এই পুকুরের জল ব্যবহার করতেন, তাই পবিত্র পুকুর রূপে ভক্তদের কাছে এটি 'পুণ্যপুকুর' নামে খ্যাত।

পুণ্যপুকুর
মন্দির প্রাঙ্গনে সুন্দর কেয়ারি করা বাগানের মধ্যে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে হেঁটে পৌঁছে গেলাম মায়ের পুরাতন বাড়িতে। মায়ের পুরাতন বাড়িটা যেন ঠিক আগের মতো অবিকল রয়েছে। এই পুরাতন বাড়িটিতেই সারদাদেবী জীবনের দীর্ঘতম সময় অতিবাহিত করেছিলেন। এই ঘরেই অনেক ভক্ত তাঁর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেছেন। পুরাতন বাড়িতে রয়েছে মায়ের একটি রান্নাঘর, মায়ের এই রান্নাঘরটিও সুন্দর করে সাজানো রয়েছে।

মায়ের পুরাতন বাড়ির রান্নাঘর
সারদা দেবীর ভায়ের মানসিক বিকারগ্রস্থ স্ত্রী সুরবালা দেবী যিনি ভক্তদের পাগলী-মামী নামে পরিচিত তাঁর বাস ঘরটিও এই পুরাতন বাড়িতে মায়ের ঘরের পাশে অবিকল রয়েছে। তাঁর মেয়ে রাধারাণি যার অপর নাম 'রাধু'কে মায়ের মতোই সারদা মা যত্ন করতেন। সুরবালা দেবীর পাশের ঘরটি ছিল মায়ের বৈঠকখানা, সেখানেই প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। জয়রামবাটীতেও কামারপুকুরের মতো প্রাসাদ বিতরণ হয়। এখানেও প্রসাদ পেতে গেলে অফিসঘর থেকে আগে থেকে কুপন কেটে নিতে হবে।

মায়ের ঘর পাশে সুরবালা দেবীর ঘর
জয়রামবাটীর মাতৃ মন্দির দর্শন করে মেইন রোডে এসে খানিকটা এগিয়ে বাঁ-দিকে টার্ন নিয়ে মুলুক যাওয়ার রাস্তায় চলে এলাম জিবট্যা গ্রামে। এই গ্রামে রয়েছে পঞ্চরত্ন দামোদর বা শালগ্রাম মন্দির। এই মন্দিরটি ১৮৩৩ খ্রীষ্টাব্দে গ্রামের সমৃদ্ধশালী রায় পরিবারের প্রতিষ্ঠিত। ইঁটের তৈরি তিন খিলানযুক্ত প্রবেশপথের এই মন্দিরের সামনের দেওয়ালে কৃষ্ণলীলা, লঙ্কাযুদ্ধ, পৌরাণিক কাহিনী ও দেবদেবী সম্পর্কিত পোড়ামাটির অলঙ্করণ দেখতে পাওয়া গেলো। এই মন্দির সংলগ্ন পশ্চিমে চুনবালির পলেস্তারা করা দু'টো ছোট আটচালার শিবমন্দির এবং পূর্বে একটি দূর্গা-দালান রয়েছে। দূর্গা-দালানের প্রতিষ্ঠালিপি থেকে জানা যায় যে ১২৯৭ খ্রীষ্টাব্দে ওই গ্রামের রায় পরিবারের জগন্নাথ রায় বাংলাদেশের তাজপুরের মিস্ত্রি শ্রীপানাউল্বা কাজিকে দিয়ে এই দালান মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন। মন্দির দর্শন করে গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে মুলুক মোড়ে এসে গড়বেতা-কামারপুকুর রোড হয়ে বাড়ি ফিরলাম।

জিবট্যা গ্রামের দূর্গা-দালান
» থাকার ব্যবস্থা

কামারপুকুরে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের নিজস্ব অতিথিশালা রয়েছে সেখানে থাকতে হলে আগে থেকে বুকিং করে রাখতে হয়। এছাড়া কামারপুকুরে মঠের ঠিক বাইরেই অনেক বেসরকারি লজ রয়েছে যেমন গদাধর লজ, রিলাক্স লজ ইত্যাদি সেখানেও থাকা যেতে পারে। জয়রামবাটীতে মাতৃ মন্দিরের সামনে সেরকম থাকার ব্যবস্থা একটু দূরে থাকার জন্য রয়েছে নীলাচল লজ ও বারদা লজ তাই কামারপুকুর থাকায় ভালো।

» কামারপুকুর ও জয়রামবাটীর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি লজ এবং গেস্ট হাউসের ফোন নম্বর
  • রামকৃষ্ণ মঠ যাত্রীনিবাসঃ- ৭৮৭২৮০০৮৪৪ ০৩২১১ ২৪৪২২১
  • মাতৃমন্দির যাত্রীনিবাসঃ- ৭৪০৭৫০৯০৫০, ৭০৪৭২৭৯৪৪৯, ০৩২৪৪ ২৪৪২১৪, ০৩২৪৪ ২৪৪৯১১
  • গদাধর লজঃ- ৮৯০২৩৯২২৯৭, ০৩২২১ ২৪৪২৭৬
  • রিলাক্স লজঃ- ০৩২১১ ২৪৪৬৯৯
  • লাহা লজঃ- ৯৪৭৪১৮৪৭৬৭
  • সারদা লজঃ- ৯৫৬৪৬৬১৬২৯
  • হোটেল অনন্যাঃ- ৯৪৩৪৫৮৭৫৫৪
  • রামকৃষ্ণ লজঃ- ৯৭৩২৪২৯০৩৩
» জয়রামবাটী মঠে মাতৃমন্দির দর্শনের সময়
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর – ভোর ৪ টে থেকে দুপুর ১১টা এবং বিকাল ৪ টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত
অক্টোবর থেকে মার্চ – ভোর ৪ টে ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ১১ টা ৩০ মিনিট এব বিকাল ৩ টে ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত

» কামারপুকুর ও জয়রামবাটির বিশেষ দ্রষ্টব্য স্থান
  • শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের ভিতরে ঠাকুরের হাতে লাগানো আমগাছ, মন্দির (যেখানে কামকৃষ্ণদেব ভুমিষ্ট হয়েছিলেন), ঠাকুরের বাড়ি, বৈঠকখানা, যুগীদের শিবমন্দির
  • হালদার পুকুর (যেখানে বাল্যকালে ঠাকুর স্নান করতেন)
  • কামারপুকুর (যে পুকুরের নামে এই কামারপুকুর)
  • লাহাবাবুদের পাঠশালা ও চণ্ডিমণ্ডপ, রাসমঞ্চ, দুর্গাদাস পাইনের বাড়ির ভিতরে বিষ্ণু মন্দির
  • পার্বতীনাথ শিবের মন্দির
  • সীতানাথ পাইনের বাড়ি, ভিতরে শ্রীরামকৃষ্ণস্মৃতি নাট্যমঞ্চ ও পাইনদের বিষ্ণুমন্দির
  • গোপেশ্বর শিবের মন্দির
  • ধনী কামারিনীর মন্দির ও ভবতারিনী মন্দির
  • চিনু শাঁখারীর বাস্তুভিটা
  • লক্ষ্মীজলা ও ভূতির খাল, বটগাছ ও ভূতির শ্মশান, বুধুই মোড়লের শ্মশান
  • ভুরসুবো গ্রামে মাণিক রাজার বাড়ি
  • অনুড় গ্রামের বিশালাক্ষ্মী মন্দির
  • দেরেপুর গ্রামের ক্ষুদিরাম রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম
  • জয়রামবাটীর শ্রী শ্রী মাতৃ মন্দির এবং সারদা মায়ের পুরাতন বাড়ি ও নতুন বাড়ি
  • সিংহবাহিনীর মন্দির
  • কোয়ালপাড়া আশ্রম
  • জিবট্যা গ্রামের রায় পরিবারের দূর্গা দালান ও দামোদর মন্দির
★★ টোটো ভাড়া করে এই সকল জায়গাগুলো দেখে নেওয়া যায়। সম্ভব না হলে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের গেটে অপেক্ষারত গাইডদের পঞ্চাশ একশ টাকা দিয়ে মঠের আশেপাশের কিছু দ্রষ্টব্য স্থান পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায়।

» পথ নির্দেশিকা
© ছবি ও লেখাঃ- অরবিন্দ পাল (তথ্যসূত্রঃ- 'হুগলি জেলার ইতিহাস' - সুধীর কুমার মিত্র, 'বাঁকুড়া জেলার পুরাকীর্তি' - অমিয়কুমার বন্দোপাধ্যায়, 'শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ' - স্বামী সারদানন্দ, 'শ্রীমা সারদা দেবী' - স্বামী গম্ভীরানন্দ)
KAMARPUKUR, JAYRAMBATI, HOOGHLY, WEST BENGAL
Arabinda Pal
1 Comments
Share This Post :

You Might Also Like

1 comment:

[name=Arabinda Pal] [img=https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEia50rmuKEAcbGUbQKvAbzUmdviiIhm-LeVlsEEdFx_xtGfyvx8O02yFVuJemgswzSA8PoMcN-XW0AcinKr9iq28lHK43Z4TFFyL7pJyGGxLNx9LGn0cLvPz0lUJzNrWBo9n_NyxGLjDII/h120/IMG_2788.jpg] [description=পর্যটক হিসাবে নয়, একজন ভ্রমণকারী হিসাবে বেড়ানোটা আমার কাছে একটা নেশা এবং ফটোগ্রাফিতেও আমার ভীষণ শখ। তাই একজন ভ্রমণকারী হিসাবে আমার এই ব্লগে নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে লেখা ও ছবিগুলো যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের মতামত কমেন্টসের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।] (facebook=https://www.facebook.com/groups/2071066419824586/user/100002484831922) (twitter=Twitter Profile Url) (instagram=https://www.instagram.com/arabindapal2020/) (bloglovin=Blogvin Profile Url) (pinterest=https://www.pinterest.com/arabindapalbrb/) (tumblr=Tumblr Profile Url)

Follow @Arabinda Pal