শাল মহুলের জঙ্গল ঘেরা ঝাড়গ্রাম জেলার 'চিল্কিগড়' একসময় ছিল জামবনির প্রাদেশিক সামন্তরাজাদের দুর্গ ও গড়বাড়ি। চিল্কিগড়ের রাজারা ছিলেন ধলভূম রাজবংশেরই অংশবিশেষ। এখনো তাদের উত্তরসূরীদের অধীনে রয়েছে চিল্কিগড় রাজবাড়ী। জামবনি রাজাদের প্রতিষ্ঠিত কূলদেবতা তথা চিল্কিগড়ের প্রধান দেবী কনকদুর্গা আজও জঙ্গলমহল জুড়ে জাগ্রত দেবী হিসেবে পরিচিত। ডুলুং নদীর পশ্চিমে রাজবাড়ী আর পূর্বে নদীর অপর পাড়ে গভীর জঙ্গলের মধ্যে কনকদুর্গার মন্দির। খুব বিখ্যাত না হলেও কনকদুর্গা ছাড়া রুক্মিণীদেবী রাজবংশের কুলদেবতার মতনই পূজিত হন। কনকদুর্গার কনকের সমারোহের তলায় রুক্মিণী দেবীর প্রতিপত্তি যেন চাপা পড়ে গিয়েছে। এবারের 'উইক-এন্ড ট্যুর' পরিকল্পনায় ভাবলাম চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দির দিয়ে শুরু করা যাক।
 |
| ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী |
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী
চিল্কিগড় ঝাড়গ্রামের ওপর দিয়ে যেতে হয়। ঝাড়গ্রাম শহরে ঢুকে ঠিক করলাম এসেইছি যখন তখন এখানের রাজবাড়ীটা একবার ঘুরে গেলে মন্দ হয় না। রাজবাড়ীর তোরণের একপাশে গাড়ি পার্ক করে কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে চলে এলাম রাজবাড়ীর মেন গেটের সামনে। ঝাড়গ্রাম ভ্রমণের মূল আকর্ষন এই 'রাজবাড়ী'। রাজবাড়ীর ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই। গেটের সিকিউরিটি গার্ডের কাছে জানলাম, যদি কেউ রাজবাড়ি চত্বরে ‘দ্য প্যালেস ট্যুরিস্ট রিসর্ট’ গেস্টহাউস এবং রাজবাড়ী সংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের টুরিজম কমপ্লেক্সে থাকেন তবেই রাজবাড়ি চত্বরে প্রবেশ করার অনুমতি পায়।
 |
| রাজবাড়ীর মেন গেট |
পর্যটকদের কাছে রাজবাড়ীটি ঝাড়গ্রামের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান হিসেবে প্রচার করা হলেও গেটের বাইরে থেকে দর্শন করে ফিরে আসতে হয়। রাজপরিবারের উত্তরসূরিরা এখনো রাজবাড়ীর দোতলায় বসবাস করেন তাই সর্ব্বসাধারণকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। রাজবাড়ীর সামনে মনোরম বাগান ও সুন্দর একটি ফোয়ারা। পাহারায় থাকা সিকিউরিটি গার্ডকে অনুরোধ করে কিছুক্ষনের জন্য রাজবাড়ীর সামনে চত্বরটি ঘুরে দেখার অনুমতি পেলাম।
 |
| রাজবাড়ী চত্বর |
গেটের ভেতরে ঢুকে প্রথমেই বাম হাতে চোখে পড়লো একটি গেস্টহাউস, "দ্য প্যালেস ট্যুরিস্ট রিসর্ট"। এই গেস্টহাউসেই এখন পর্যটকদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এই গেস্টহাউসটিকে কখনও 'বাঘবন্দি খেলা'য় ভবেশ বাড়ুজ্জের বাড়ি, তো কখনও 'সন্ন্যাসী রাজা'র সূর্যকিশোর নাগচৌধুরীর প্রাসাদ হিসেবে বহুবার দেখেছি কিন্তু নিজের চোখে কখনো দেখা হয়নি। বেশ কিছু সিনেমা ও দূরদর্শনের ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে রাজবাড়ীর এই গৃহটিকে। যেহেতু ভেতরে যাওয়ার অনুমতি নেই তাই সামনে থেকেই রাজবাড়ীকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে দিয়ে দু-একটা পোজে ছবিটবি তুলে বেরিয়ে এলাম। রাজবাড়ীর সামনেই ছিল 'গ্রীন পার্ক' রেস্টুরেন্ট; সেখানে ভাত, মুগ ডাল, আলু ভাজা, মিক্সড ভেজ ও কাতলা মাছের ঝোল দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে চিল্কিগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
 |
| "দ্য প্যালেস ট্যুরিস্ট রিসর্ট" |
কনকদুর্গা মন্দির
ঝাড়গ্রাম শহর পেরিয়ে দুপাশে শাল মহুয়ার সবুজ জঙ্গলের বুক ভেদ করে চলে যাওয়া মসৃণ কালো পিচের রাস্তা ধরে এগিয়ে চললাম চিল্কিগড়ের দিকে। অজানা পাখির কূজন আর বন্য পরিবেশের অদ্ভুত একটা মিষ্টি গন্ধ যেন সারা শরীরে রোমাঞ্চকর অনুভুতি গড়ে তুললো। রাজবাড়ী থেকে প্রায় বারো কিলোমাটার যাওয়ার পর জামবনির কাছে ডানদিকে 'কনক অরণ্য' লেখা একটি সুদৃশ্য তোরণ লক্ষ্য করলাম। তোরণের নীচ দিয়ে খানিকটা এগিয়ে দেখতে পেলাম আরও একটি তোরণ কনকদুর্গা মন্দিরে স্বাগত জানানোর জন্য রয়েছে। তোরণ থেকে আরো একটু এগিয়ে, পার্কিং লটে গাড়ি রেখে টিকিট কেটে মন্দিরের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। গেট পেরিয়ে গভীর জঙ্গল ভেদ করে দুপাশে ফেন্সিং করা পথ চলে গেছে অনেকটা ভেতরে ডুলুং নদীর পাড়ে কনকদুর্গার মন্দিরে।
 |
| কনক অরণ্য তোরণ |
কনকদুর্গা মন্দির পর্যন্ত পায়ে হেঁটে চলার সময় দুইধারের নয়নাভিরাম গাছ-গাছড়া ও গা ছমছমে পরিবেশের যে অনুভূতি তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। এই ঘন সবুজ অরণ্যের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে এক অন্যরকম রোমাঞ্চে আবিষ্ট হতে হয়। যাওয়ার সময় পথের দু'ধারে দেখতে পেলাম লতাপাতা জড়ানো অজস্র ঔষধি গাছ-গাছড়া। বহু পুরনো শাল, মহুল, কেন্দু, সাদা শিমূল, লাল শিমূল, রুদ্রাক্ষ, আমলকি, হরতুকি, বহেড়া, চালতা, কুচিলা, কেলিকদম্ব, দারুহরিদ্রা, মণিকাঞ্চন ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য গাছের বাগান। প্রতিটি গাছের গায়ে নামের লেবেল সাঁটা রয়েছে। এই সমস্ত গাছ-গাছড়া সংরক্ষণের প্রয়োজনে এখানে এখন পিকনিক করা বন্ধ করে দিয়েছে। গভীর জঙ্গল ভেদ করে চলার পথে জঙ্গলের ফাঁকফোকরে সাক্ষাৎ পেলাম বুনো হাতি, হরিণ এইরকম কিছু জীবজন্তুর। প্রথম সাক্ষাতে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম..., হঠাৎ হাতি দেখে একটু পিছিয়ে গেলাম। পরে বুঝলাম ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই ওগুলো সবই রেপ্লিকা। অনেকটা পথ এইভাবে পার হয়ে চলে এলাম কনকদুর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে।
 |
| কনক দুর্গা মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা |
জঙ্গলের মধ্যে ডুলুং নদীর পাড়ে এক কোণে একটি পুরাতন বট গাছের তলায় জামবনির রাজাদের কনকদুর্গার ভগ্নপ্রায় পঞ্চরত্ন মন্দিরটি কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। ১৭৪৯ খ্রীষ্টাব্দে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন রাজা গোপীনাথ সিংহ। রাণী গোবিন্দমণির হাতের সোনার কঙ্কণ দিয়ে তৈরি করা হয় দেবীর মূর্তি। কনকদুর্গা দেবী চিল্কিগড়ের প্রধান দেবী। ভূতপূর্ব এই পঞ্চরত্ন কনকদুর্গার মন্দিরটি বিশাল নয়। তিন খিলানের এই মন্দিরটির ভিত্তিবেদী মাকড়া পাথরের হলেও মন্দিরটি আগাগোড়া ইঁটের তৈরি। বহু পুরাতন এই মন্দিরের মাথায় ও চারদিকের শেওলা ধরা দেওয়ালের গায়ে জায়গায়-জায়গায় গজিয়ে উঠেছে বট-অশ্বত্থের চারা। মন্দিরের পূর্ব দিকের দুই কোণের দু'টো চূড়া বহুদিন আগেই ভেঙ্গে গিয়েছে। মন্দিরের সামনে দরজায় তালা ঝুলছে। বন্ধ কাঠের দরজার দু'টো পাল্লার কিছুটা অংশ ভেঙ্গে গেছে। দরজার খিলানের মাঝ বরাবর ফেটে গেছে। শোনা যায় বজ্রপাতের কারণে পুরাতন কনকদুর্গা মন্দিরের মাঝে এই ফাটল ধরে যায়। বর্তমানে মন্দিরটি জীর্ণ হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত।
 |
| প্রাচীন কনকদুর্গা মন্দির |
১৯৩৭ খ্রীষ্টাব্দে সাবেক পঞ্চরত্ন মন্দিরের পাশে রাজা জগদীশচন্দ্র দেও ধবলদেব নাট-মন্দির সহ নতুন একটি একরত্ন মন্দির তৈরি করেন। তবে নতুন এই মন্দিরটিতে আগেকার পঞ্চরত্ন মন্দিরের মতো স্থাপত্যরীতির কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। কনকদুর্গা মহাসমারোহে পূজিত হন এবং বলিদান সাড়ম্বরে হয়। কনকদুর্গা মন্দিরে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও পার্শবর্তী জেলা উড়িষ্যা ও ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকেও অনেকে বিবাহ, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি নানারকম শুভকার্য সম্পাদনের জন্য এসে থাকেন। নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর আসল মূর্তিটি চুরি হয়ে যাওয়ায় সেখানে বর্তমান মন্দিরের এই অষ্টধাতুর কণকদুর্গা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কনকদুর্গা আসলে বনদুর্গা রূপে জঙ্গলমহলের কোনো বনদেবী ছিল। পরে জামবনির রাজাদের রাজকীয় পোষকতায় কনকমন্ডিত হয়ে তিনি কনকদুর্গা নামে পরিচিতি লাভ করে। শোনা যায় এককালে জঙ্গলমহলের রাজা জংলী রীতিতে দেবীর সামনে বন্দী শত্রুর মুন্ডচ্ছেদ করে নরবলি দিয়ে দণ্ড দিতেন। প্রথমবার যখন এখানে এসেছিলাম তখন এখানের থমথমে জঙ্গল ঘেরা বন্য পরিবেশ দেখে মনে হয়েছিল যা সত্য হতেও পারে। আজও কনকদুর্গা মন্দিরের পাশে ডুলুং নদীর তীরের পরিবেশ দেখে হারানো অতীতের সেই আরণ্যক হিংস্রতার কথা মনে করলে গা ছমছম করে।
 |
| নতুন কণকদুর্গা মন্দির |
মন্দির চত্বরে পুজো সামগ্রী ও খাবারের কয়েকটি দোকান রয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে অরণ্যে ঘেরা খালের মধ্যে বোটিংয়ের জন্য রাখা কয়েকটি প্যাডেল বোট দেখতে পেলাম। বোটিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ইচ্ছা করল না, বোটিং করে আর সময় ও অর্থ ব্যয় করলাম না। কিন্তু মনে মনে অনুভব করলাম জঙ্গল ঘেরা এই খালের মধ্যে বোটিং করে আমাজনের মতো না হলেও কিঞ্চিৎ নৌকাবিহারের আনন্দ উপভোগ করা যেতে পারে। মন্দির চত্বরে অনেক ছোটছোট হনুমানের সাক্ষাৎ মিললো, তাদের খুনসুটি দেখতে দেখতে কখন যে সময় ফুরিয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না। কনকদুর্গা মন্দিরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকে বিগ্রহ দর্শন করে পুরাতন মন্দিরের পাশে জঙ্গলের পথটি অনুসরণ করে একরাশ সুগন্ধী স্মৃতি নিয়ে চললাম চিল্কিগড় রাজবাড়ীর দিকে।
চিল্কিগড় রাজবাড়ী
পুরাতন কনকদুর্গা মন্দিরের পাশে গাছগাছালি দিয়ে ঘেরা সরু মোরামের রাস্তাটি নেমে গিয়েছে ডুলুং নদীতে। এই পথটির চারপাশেও ভেষজ উদ্ভিদের সমাবেশ। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তারের জাল দিয়ে পুরো উদ্যানই ঘেরা। শুধু মাঝখান দিয়ে চলাচলের একটি মোরামের পথ। সেই পথ দিয়ে নামতে নামতে পৌঁছে গেলাম ‘ডুলুং’ নদীর পাড়ে। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ডুলুং নদী, নামটি যেমন মিষ্টি তেমনি সুন্দর তার রূপ। কোথাও গ্রামের ছেলেমেয়েরা স্নানরত। শান্ত নিস্তরঙ্গ ডুলুং নদীর স্বচ্ছ হাটু জলে পা ভিজিয়ে খুব মজা করলাম। এঁকেবেঁকে হারিয়ে যাওয়া ডুলুং নদীর মাঝে দেখা গেলো ইতস্তত বড় বড় পাথর। জুতো খুলে হাঁটু পর্যন্ত প্যান্ট গুটিয়ে নদীর জলে পাথরে পাথরে পা রেখে কখনো হেঁটে কখনো লাফিয়ে নদী পার হলাম।
 |
| ডুলুং নদী |
ডুলুং নদী পার হয়ে সাঁওতাল পল্লীর ভেতর দিয়ে পায়ে হেঁটে চলে এলাম চিল্কিগড় রাজবাড়ীতে। চিল্কিগড়ের রাজারা ছিলেন ধলভূম রাজবংশেরই একটি শাখা। ঝাড়গ্রামের এই অঞ্চলটি জামবনির অন্তর্গত। জামবনি রাজাদের দুর্গ ও গড়বাড়ি হলো এই চিল্কিগড়। গোপীনাথ সিংহ ছিলেন জামবনির তদানীন্তন সামন্তরাজা। পাশের রাজ্য ধলভূম রাজবংশের রাজা জগন্নাথ ধবলদেব জামবনির তদানীন্তন রাজা গোপীনাথ সিংহের কন্যা সুবর্ণমণিকে বিয়ে করেন। রাজা গোপীনাথ সিংহের কোনো পুত্র সন্তান না থাকায় তাঁর নাতি অর্থাৎ জগন্নাথ ধবলদেবের পুত্র কমলাকান্ত দেও ধবলদেব পরবর্তীকালে জামবনি রাজ্যের অধিকার লাভ করেন। এই কমলাকান্তের বংশধররাই জামবনির রাজবংশ। চিল্কিগড়ে এখনো রয়েছে জামবনি রাজাদের দুর্গ ও গড়বাড়ি। গড়বাড়ির তোরণ দ্বার দিয়ে প্রবেশ করে সামনেই দেখা গেলো বিশাল প্রাঙ্গন জুড়ে রয়েছে ধবলদেব রাজপরিবারের রাজবাড়ীটি। রাজা জগদীশচন্দ্র ধবলদেবের আমলে পুরাতন গড়বাড়ির সামনে ইঁট চুন-সুরকির তৈরি নতুন দোতলা প্রাসাদটি নির্মিত হয়। রাজবাড়িটি আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত তবে তার সৌন্দর্য আজও সবাইকে মুগ্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট। অদূরে পাহাড়ী নদীর মতো সুন্দর আঁকাবাঁকা গতিতে কিছুটা রাজবাড়ীর গড়ের মতন বেষ্টন করে বয়ে চলেছে ডুলুং নদী।
 |
| চিল্কিগড় রাজবাড়ী |
জামবনি রাজবংশের এই গড়বাড়িতে দেও ধবলদেব পরিবারের প্রতিষ্ঠিত কালাচাঁদের পূর্বমুখী নবরত্ন মন্দির এবং শিবের দক্ষিণমুখী একরত্ন মন্দিরটি স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে অভিনব। কারণ এখানে এই মন্দিরগুলো প্রথাবহির্ভূত দালানের ওপর যথাক্রমে নবরত্ন ও একরত্নের সংযোজন ছাড়াই তৈরি। তিন খিলানের খোলা বারান্দাযুক্ত কালাচাঁদের নবরত্ন মন্দিরটি এই স্থানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এই মন্দিরে এখনো নিত্য পূজো হয়। মন্দিরে প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
 |
| কালাচাঁদ মন্দির |
তোরণ দ্বারের পাশে সুপ্রাচীন এক বটগাছের ছায়াতলে ভগবান শিবের একরত্ন মন্দিরটিও এখানের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া এখানে রয়েছে একটি রাসমঞ্চ। রাজবাড়ীর বাইরে লোহার তৈরী একটি বড় রথের কাঠামোও দেখতে পেলাম।
 |
| রাসমঞ্চ |
রাজবাড়ীর অন্দরমহলে প্রবেশ নিষেধ। শুধু বাইরে থেকে রাজবাড়ী ও তার চারপাশ ঘুরে বাইরের সৌন্দর্য অনুভব করে চিল্কিগড় ছেড়ে চললাম ঝাড়গ্রাম অভিমুখে। ঝাড়গ্রাম শহরকে পেছনে ফেলে ধেড়ুয়ার কাছে কংসাবতী নদীর ব্রীজ পার হয়ে মেদিনীপুর শহরের মধ্যে দিয়ে রাতের বেলায় ঘরে ফিরলাম।
 |
| শিব মন্দির |
» থাকার ব্যবস্থাচিল্কিগড়ে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। থাকার জন্য ঝাড়গ্রামে ছোট বড়ো প্রচুর হোটেল ও গেস্ট হাউস আছে। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ীতে থাকতে চাইলে ‘দ্য প্যালেস ট্যুরিস্ট রিসর্ট’ গেস্টহাউস রয়েছে এছাড়া রয়েছে রাজবাড়ী সংলগ্ন চত্বরে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের টুরিজম কমপ্লেক্স। এগুলো ছাড়া উল্লেখযোগ্য হোটেল হলো ঝাড়গ্রাম প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র, চেতনা ইকো ভিলেজ রিসোর্ট, অরণ্য সুন্দরী গেস্ট হাউস ও ডুলুং গেস্ট হাউস।
» ঝাড়গ্রামের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেলের ফোন নম্বর
» পথ নির্দেশিকা
© ছবি ও লেখাঃ- অরবিন্দ পাল (তথ্যসূত্রঃ- 'পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি' - বিনয় ঘোষ)
No comments:
Post a Comment